শর্মিষ্ঠা ঘোষ’র কবিতা

লেখক পরিচিতি

জন্ম ১৯৭৪ সালে। ছাত্রাবস্থা থেকেই লেখালেখি শুরু। কবিতাই প্রথম পছন্দ। তাছাড়াও গল্প-প্রবন্ধ লিখে থাকেন। অবসরে অনুবাদ করেন ইংরেজি ভাষা থেকে। এ যাবৎ প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ চারটি। “অলীক অলীক ভালোবাসা”, “স্পর্শবিন্দু”, “এখন সংহত অন্দরে” এবং “ভুয়ো প্রেম. কম”। তাছাড়া মিলিজুলি কাব্যগ্রন্থ তিনটি। “নাকছাবির কথকতা” এবং “প্রকৃত সারসী” বিশেষ উল্লেখ্য। প্রধানত লিটিল ম্যাগাজিন এবং দু-একটি বাণিজ্যিক পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন।


বৃষ্টিদিন

তাহলে বলা যাক শুভ বৃষ্টিদিন
ল্যাদ খেতে খেতে ভিজতে দেখছি আমার ডামি
জলে কার বাড়ি হারিয়ে গেছে
ছাতা আর মোবাইল খুঁজে পাচ্ছেনা ঠিকানা
উদ্বিগ্ন মুখ ঘুরে যাচ্ছে এগলি ওগলি
ওর পায়ের ছাপ অনুসরণ করতে চেষ্টা করছি
বৃষ্টি ধুয়ে ফেলছে সংকেত
সংযোগ স্থাপন এর জন্য আড্ডা খুঁজছি একটা
সাথে মাটির ভাঁড়ের ফুটপাথের চা
চিনি ছাড়া কড়া লিকার
আর তোমাকে
প্রচুর বৃষ্টি জমিয়ে রেখেছি
কিছু দিয়ে ভার মুক্ত হতে চাই।

ভূতগ্রস্ত

কতদিন স্পর্শাতীত আদিম স্বপ্নে যেন কতবার
যেভাবে ছুঁইনি আদৌ সেভাবেও পাওয়া দুর্বার
তবে কি দমিত ছিল তবে কি উন্মাদ প্রকরণ
তবে কি কুন্ঠা ছিল না চাওয়ার আসল কারণ
আমিও মানুষ বটে আমিও দুর্বল যথারীতি
আমিও ফ্যান্টাসি ভেবে ছকভাঙা গতে তাকে বাঁধি
মুখ মুছে চুপচাপ তারপর অবোধ অতীত
হাতে পাতে যতখানি ততটাই বাঁচার তাগিদ
বাকি সব ভূতগ্রস্ত বাকি সব অহেতুকি কথা
এই নিয়ে গোটা আমি এই নিয়ে তোর কাছে থাকা

মেঘলা

আমার কি আর গেছে বল এদিক সেদিক
যা ছিল তা তোমার ছিল তোমার একার
সেসব দিনের গন্ধে যেটুক আতর সুবাস
অন্যকারোর মেকিং এবং সৌজন্য তা
মেঘলা আমার ভালোই লাগে সেকথা নয়
মেঘলা অনেক গল্প জানে ডোবার ভাসার
তুমি এখন যেখানে হোক সঙ্গী হলে
গোল্লায় যা বলতে পারি মনখারাপ
তবু তোমার ডিপ্রেশানের সন্ধ্যে সকাল
সাজানো থাক সাজিয়ে রাখ বলতে পার
আমি কিন্তু এসব আবার উল্টো বুঝি
অতিক্রমের পর কোন তার গল্প নেই

আজও

এলোমেলো বৃষ্টির মাঝে
ঝমঝম গাছ হয় ভিজি
বুনো ঘাস দোসর যখন
বীজ তার মেঘ আহ্লাদী
তুমি কবে মেঘদূত প্রিয়
তুমি কবে যক্ষ অসুখী
এস কিছু ধুয়ে ফেলি ভুল
এস কিছু রয়ে সয়ে থাকি
এস ফের ছুঁয়ে দেখ জল
আজো দেখ চোখ ডোবে ভাসে

বৃক্ষ

বৃক্ষ প্রাণ পেয়েছিলে বামনের বনে
আগাছা পোড়ায় নি তোমায়
যতদূর চোখ গেল উড়ান উৎসব
যতদূর ইচ্ছের মাটি জল টান
শালপ্রাংশু বাহু ডোরে
এঁড়ে গেঁড়ে ভুঁইফোঁড় দিব্য আঁটিয়ে
রোজ রোজ বাড়িয়েছ স্নেহ ছায়া ঋণ
চুক্তি পত্রে ছিলেনা কোথাও
দেয়ালেও লেখা নেই নাম
বাকলে কান পেতে লাবডুব
শোনা যাবে ততটাও নই ভাগ্যবান
জন্ম মৃত্যু বিস্তারে আছ
যেন ছিলে জন্মপূর্বেও
ইতিহাস বিস্মৃত হলে হোক
আয়ু ভরে লেখা থেকো বিনত প্রশ্রয়