করোনাকাল

জনেশ লোটন রায়

কবরের দরোজা ক্রমাগত খুলে যায় শব্দহীন
একেরপর এক,
পিরামিডের সুউচ্চ চূড়ার পাথর মোমের মতো
গলে পড়ে, যেন পাহাড়ের বুক চিরে উত্তপ্ত লাভা!
আমরা কি ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছি অন্ধকার
কবরের গহীন ভিতর!

যে পুরুষ তার নিজ বারান্দার ফুলের টবের দিকে
ভ্রূক্ষেপ করেনি কোনদিন –
সে পুরুষই যখন নিড়ানি খোঁজে,
প্রেমময়ী নারীটি তখন মুখ টিপে হাসে।
যে পুরুষটি ঠিকঠাক মতো পুত্র-কন্যার
স্কুলের খোঁজ রাখেনি, এখন সেই পুরুষ
ক্রমশই যেন পারফেক্ট পিতা হয়ে উঠছে,
কখনও কখনও আদর্শ লিপি থেকে
মুখস্ত শোনায় নৈতিক কবিতা।
যে পুরুষটি হেসেলে যাওয়া প্রেস্টিজের ভেবে নিতো,
আজ সে আপন নারীর শরীর ঘেঁষে দাঁড়ায়-
বড়ই রোমান্টিকতায়!
এখন ফুলের বাগানে আগের চেয়ে
বেশি সুগন্ধ ছড়ায়,
অবাধ্য কিশোর বায়না ছেড়ে
যন্ত্রে সুর সাধে আপন মগ্নতায়।
রাস্তায় শুনশান নীরবতা,
প্রকৃতি ফিরে পায় আপন মহিমা
বাতাসে নেই কোনো কার্বনের আস্তরণ
একবুক শ্বাস নেই পরম শান্তিতে।
শুশুক কিংবা ডলফিন ফিরে পায়
নিজস্ব জলাশয়।
এখন পুরুষ জানে পরিবারের মানে–
স্নেহ, প্রেম, রোমান্টিকতায়!