রাশেদা মোকাম
কোনও এক আসামীর মতো বন্দী যৌবনের খামে,
আমার হৃদয় মাঝে ভাত হয়ে উতরাচ্ছে প্রেম।
জ্বালিয়েছি সংখ্যাতীত বাত্তি তাই রাশেদা মোকামে,
হক্কানী প্রেমের টানে এই আমি হয়েছি খাদেম।
হরদম মগ্ন হয়ে করে যাচ্ছি তার নামজপ
দু’নয়নে অবয়ব রেখে রেখে, গভীর ধেয়ানে।
যেন তার সুললিত শরীরটা সৌন্দর্যমণ্ডপ,
কামের ঢেকুর ওঠে সহসাই আমার পরাণে।
হরিণের মতো দুটি চোখ যেন প্রেমের প্রদীপ
মোলায়েম কন্ঠ তার অমৃতের মতই মধুর।
গোলগাল চাঁদ হয়ে বসে আছে কপালের টিপ
অপরূপ জেওরাতে তার দুই কান ভরপুর।
নাকে তার ফুটে আছে সপ্রতিভ মুকুল আমের,
আমার হৃদয়ে শুধু ঢেউ ওঠে রাশেদা নামের।
২
তোমার ইচ্ছার নাকে হাসিমুখে পরাতে নোলক
হয়েছি প্রেয়সী আমি ছলাহীন প্রেমের সাধক
অবিরাম মক্তবের শিশুদের মতো উচ্চস্বরে
তোমার নামের মন্ত্রটাকে শুধু জপ করে করে
হাতের পাতায় লিখে পরিপূর্ণ রূপের বাখান
ফানাফিল্লা হয়ে আমি দিনরাত করি ঐকতান
কপর্দকহীন কোনো ভবঘুরে বাউলের মতো
হৃদয়ে সাধনা ছাড়া এতটুকও নেই কোনও ক্ষত
তোমার তৃষ্ণায় যদি কখনও-বা হতে পারি জল
ভেবে নেবো হয়ে গেছে এ আমার সাধনা সফল
৩
কাঠের ভেতরে আলপিন ঢোকে জেনেও একদা
আম্মার নিষেধে কাঠ-শক্ত করেছিলাম হৃদয়
কখনও পড়ি না যাতে আমি কোনও বালিকার প্রেমে
কিন্তু প্রতিজ্ঞাকে তুমি পলেস্তারা ভেবে, ভেঙে ফেলে
কাঠখণ্ডে বিঁধে যাওয়া কোনও আলপিনের মতন
হৃদয়ে পড়েছো ঢোকে কপর্দকহীন পুরুষের
এখন তোমার নাম কামারের হাতুড়ির শব্দ
হয়ে বাজতেছে অবিরাম এই বুকের গহীনে
যেন নিশিরাতে গাছ থেকে ঝরলো একটি পাতা
তার শব্দে সচকিত হয়ে গেলো যুবক পথিক।
৪
কসম কসম আমি চাষী হয়ে যাবো সুনিশ্চিত
তুমি যদি মূর্তি হয়ে ভেসে ওঠো ধানের পাতায়
বারোমাস চাষ করবো আমি কালিজিরা, বাসমতী
বিন্নি, নাজিরশাইল। আমার সব কৃষিজমিতে
পরিচর্যার সামান্য ত্রুটি হতে দেবো না কখনও
কাস্তে হাতে দিনমান বসে থাকবো খেতের আলে
জালালি কৈতর কিংবা কাকতাড়ুয়ার বেশ ধরে
তোমাকে চোখের মধ্যে জিইয়ে রাখার বাসনায়
মেনে নেবো ধানজন্ম পৃথিবীতে লক্ষ-কোটিবার
কখনও শুকিয়ে রোদে খড় হতে দ্বিধা করবো না