আলোকবর্ষী মহামানবের জন্ম শতবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি !

জনেশ লোটন রায়, প্রধান সম্পাদক

একটি মানুষ আলোকবর্ষের মতো দীর্ঘ, মহান। যাঁর নামে একটি বর্ষ উৎসর্গীকৃত, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি – একটি সার্বভৌম স্বাধীন দেশের সৃষ্টিকর্তা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবর্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বঙ্গবন্ধু সারা জীবন সাদামাটা জীবনযাপন করেছেন। তিনি ছিলেন জনগণের কাতারের মানুষ। তিনি মনে করতেন জনগণ এবং জনগণের ভালোবাসাই শক্তি।  বৃটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টের বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আপনার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা কী’ – এ প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি আমার দেশের মানুষকে ভালোবাসি।’ ‘আপনার দুর্বলতাটা কী’ – এ প্রশ্নের উত্তরেও বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি আমার দেশের মানুষকে বেশি ভালোবাসি।’ স্বাধীনতার পরে প্রথম দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার বাংলাদেশ আজ স্বাধীন হয়েছে, আমার জীবনের সাধ আজ পূর্ণ হয়েছে, আমার বাংলার মানুষ আজ মুক্ত হয়েছে।’ জনগণকে ভালো না বাসলে দেশকে ভালোবাসা যায় না।  রাজনীতিক হওয়া যায় না।

বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। বাংলার মানুষ যখন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিকভাবে বঞ্চিত, শোষিত, অবহেলিত, পরাধীন; এমন শুভক্ষণে এক ত্রাণকর্তার আবির্ভাব। যার কণ্ঠে বাঙালি জাতির মুক্তি ও স্বাধিকারের আমোঘ বাণী, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এবং বাংলার মানুষ মুক্তি পেলো।

বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনটাই বাঙালি জাতির ভাগ্য রচনার এক সুদীর্ঘ সুরেলা মহাকাব্য! তাই, মাত্র পঞ্চান্ন বছর জীবনকালে তিনি হয়ে উঠলেন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু আজ শুধু বাংলার নয়, তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, স্বপ্ন, চিন্তা-চেতনা, দর্শন ও আদর্শের দৃঢ়তায় তিনি ক্রমশই হয়ে উঠলেন বিশ্বের বন্ধু, বিশ্ব নেতা। প্রখ্যাত মিশর দেশের সাংবাদিক মোহাম্মদ হাসনাইন হাইকল বলেছেন, শেখ মুজিবুর শুধু বাংলাদেশের সম্পত্তি নন, তিনি সমগ্র বাঙালির মুক্তির অগ্রদূত।

কোন শুভক্ষণে জন্মে তুমি, হলে
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি,
রাতের আকাশের লুব্ধক, জ্যোতির্ময়!
নিপীড়িত, শোষিতের মুক্তিদাতা তুমি
তোমারি হোক জয়।

এ মহামানবের জন্মদিন পালন তখনই সার্থক হবে, যখন তাঁরই আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে বঞ্চনামুক্ত-শোষণমুক্ত-বৈষম্যমুক্ত-সমতাভিত্তিক-অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে পারব।

জয় বাংলা!