কবিতা

লোনা জলের কাব্য

জনেশ লোটন রায়

লোনা জলে এই মাত্র ভিজেছে তোমার আনকোরা তনু
খুইয়েছো আবদারী নাকছাবি, সিলিকন বালুতে চপল পায়ে
রূপালী নূপুর ঝিলিক। হরিণ চোখের কাজল তখনো অমলিন!
প্রমত্ত ঢেউয়ে হারিয়েছো তুমি রক্ষিত যৌবন । আর আমি;
অনভ্যস্ত আঙ্গুলে পরম যত্নে এককোয়া রসূন-অঙ্গ থেকে
পরতে-পরতে খসিয়ে ফেলি কারুকার্য-খচিত পেলব মসলিন।

 

সমুদ্র মন্থন

দিপংকর রায় প্রতীক

এতটা চাওয়া ছিল না
চাই কি করে?
অত লম্বা হাত আমার নেই
কীভাবে পেড়ে খাব তোমার রস।
গিরিঙ্গিবাজদের পাল্লায় পড়ে হয়ত
ছুঁয়ে দেখেছি এক আধবার।
এত অল্পে ভুলে থাকি কি করে!
যেখানে তোমার সর্বস্ব দেয়ার কথা
কোন এক পিচ্ছিল আবরণে ফসকে
যাচ্ছি বারবার।
 কেমন আধার অশ্রু 
নদীতীরে উঠে আসে
কার্বন চাহনি থেকে থেকে
হু হু করে সমুদ্র মন্থনের ইতিহাস।

 

প্রতীক্ষা

তাইমুন পিয়া

এমন খাঁখাঁ দুপুরে কিরাম যেন লাগে !
কেন লাগে তা কারে বুজাই।
চৈত্তির মাস, আইজ শ্যেষ দিন।
গেল চৈতে আওনের কথা আছিল তার
 ফিরা চৈত শ্যেষ হয় তাও
কোন সাড়া নাই মানুষটার।
না একখানা পত্তর – না একটা খবর!
খরারদিনে এইহানে মাটি ফাইট্টা চৌচির
দূর থিকা গাঙডারে বুড়া মাইনেষের
চামড়ার লাহান দাগ ভরা মনে হয়।
আমাগো হেয়, যহন দূর গাঁও গেল
তহন গাঙে গলা পানি, ডোলা বাইয়া
 টলটলা পানি সরায়া হেয় গেল – কইছিল;
“বউ তুই গাঙের পারে খাড়াইয়া থাহিস
সুয্যি তোর নাকছাবির পর পড়লে
যখন ঝিলিক মারে মনে লয়
সত্যি তুই আমার হীরা মন।”
আমার বাজানের দেওয়া নসিমন নামডা
তার ভাল্লাগে নাই।
কয় বাপের বাড়ি তুই নসিমন
আর আমার ঘরে তুই হীরামন।

কত দিন! কত দিন … …
বেড়ার ফাক দিয়া ডর দেহায় না
কেউ হীরামন কইয়া!
নিজের মানুষ দূরে থাকলে কেমন লাগে
যেন কোন রাতের পাখি আঁধারে জাগে।
আলতা চুড়ি লাল ফিতে নতুন কাপড়
সুবাস তেল নতুন জুতো — কিচ্ছু চাইনে।

ও সব ছাড়া জীবন চলে
খালি সেই মানুষটা ছাড়া
জীবনের মানেই কিছু পাইনে।