কাবেরী গাঁয়ের পথ
মাঝপথে আর বাধা দিতে কেউ নেই,
একলা পেরোই…
কাবেরী গাঁয়ের পথ।
কলমী ক্ষেতের যুবতী পাখনা জল শরীরে মাখায়।
একাকী শিকারী বনে—
হাঁসকৌড়ি পাখির সঙ্গে সাঁতার কেটে যাবো…
রাত্রিদীপ্ত
কী হবে এই অক্ষম শরীরে চাষের গন্ধ মেখে,
বন্ধ্যা জরায়ু ভিজবে না গভীর
উন্মোচনে…
রাত্রিদীপ্ত থেকে পারঙ্গম ছিলে
জন্মের সান্নিধ্যে মুছে যেতে
অন্ধকার পায়ে ঠেলে শরীর গ্রন্থিত করে
সমতলে পোশাক ছাড়াই গড়াতে,
চাদর বিছিয়ে নগ্ন জলে পুরুষের প্রতিচ্ছবি পেতে,
বয়স কুণ্ডলি পাকে…
কখনো গোপন সার হয়ে মাটিতে মিশেছিলে
একান্তে বিচ্ছেদ হতে যদি পোকার কামড় খেয়ে
ফসলের বেশি ভাগ ভুলে যেতে যৌনতাকে।
মোমের শরীরে আগুন
আন্ধাকার খেদাতে মোমের শরীরে আগুন জ্বেলে দেই।
গলিত উষ্ণতা অগ্নিমুখ থেকে
গড়িয়ে নামছে—
ফোঁটা ফোঁটা ঝর্ণা ও জল; ঘামের আগুন।
কোজাগর ডুবে আছে নদীগর্ভে—
জাবর উতুঙ্গ ঢেউয়ের ঝাপটায় নিভে গেলো
কেরায় নাওয়ের কুপি
রক্তমাখা চাঁদ—বর্ষাজলে অঙ্গ ঢেকে থাকে।
সোয়াদ মাখানো ফেনভাত
পাঁজা তুলে উঠোনে পালুই রাখা। আশ্বিনের পাকাধান
ঘরে ওঠো। খাটালে বিছানো হোগলায়—
শুয়ে আছে,
সেদ্ধ ধানের উত্তাপ।
কুণ্ডলি পাকানো ধোঁয়া; উড়ে যাচ্ছো কেন?
গতরে আমোদ উতলানো—হাঁড়ির ভেতর টগবগে
আউশের চালে লাল কামিজের ভাঁজ।
সোঁদামিঠা সোয়াদ মাখানো ফেনভাত সানকিতে তুলে রাখা।
নিসর্গের বাল্যকাল
একেকদিন ফড়িং বালিকার পিছে ছোটাছুটি করেছি অনেক।
জঙ্গল-বাগান তেতুল ছায়াও ছিলো দুপুর রৌদ্দুরে
ভরা …
চেনা পাখি—হরিয়াল ছেলেমেয়ে ধানক্ষেতে
কুড়ায় তৃষ্ণার জল।
নিসর্গের বাল্যকাল ডিগবাজি দিতো; উড়িধান,
নরোম খড়ের আবডালে বালিকার উষ্ণ চুমো।
ঝিনুক মেলতো গভীর রাতের স্বপ্নগুলো;
যে ঠোঁটে চুম্বন এঁকে দিয়েছিলো—বুনো প্রজাপতি
উড়ে যাচ্ছো? তবে কার কাছে;
মৃদুশব্দ রেখে যেও… কোথায় বসতি?
রেশম কাটা ঘুড়ি
ভুলেই অস্থির! ইশারায় দুলবে ভাবছি;
খোঁপা কামড়ানো আংটার ঝিনুক।
রাতের দেহাতি পূর্ণিমার আকরে সাজানো
পসরার ঝুড়ি।
দিন খুলে গেলে চাঁদ ওঠে। চাঁদের গুটিতে থাকে রেশম কাটা
ভূগোলের বুড়ি।