ভান্ডারীর ভান্ডার

কীর্তনখোলা@নদীডটকম

স্বামী-স্ত্রী দুজনেই মুদি দোকান চালায়। ২৪ ঘন্টা টিভি চলে। কাস্টমার বোঝাই। টিভি দেখে-চা খায়। অচেতনে মাথা নাড়ে। আরেক কাপ চায়ের অর্ডার দেয়। চা খেতে খেতে এই চ্যানেল সেই চ্যানেলে চলে যাওয়া।
#
ম্যাক্সি পড়া স্ত্রী ব্যবসা ভালো বোঝে। আরও ভালো বোঝে বাংলাদেশের কিরকেট! সাকিব কেন ওয়াইড বল খেলে আউট হল-এই চিৎকার, ঝগড়ার মধ্যে কাস্টমার বেশী আসে; সে সেটা জানে।
#
কিন্তু জানে না ভান্ডারী! যদিও তার ভান্ডারে সব পণ্যই আছে, তারপরও কী যেন নেই, নেই ভাব। যখন বৌ দোকানে থাকে না; কচ্ছপ যে ভাবে উপযুক্ত পরিবেশে গলা বের করে, সেভাবে সে বের করে একটা মেমরী কার্ড। টিভির সাথে সাউন্ড বক্সে লাগিয়ে ধুমধাম চালায় সে সব। কী চালায়?
#
ভিডিওতে পল্লিগীতি, বিচারগান, পালাগান, মাইজভান্ডারীর গান-কত কী। মমতাজ, লিপি সরকার, কাজল দেওয়ান, লাল মিয়া বয়াতী, লতিফ সরকার, নার্গিস, রশিদ সরকার, বিজয় সরকার, টুনটুন ফকিরসহ বিভিন্ন বাউল-ফকিরের গান। দেহতত্ব-আল্লাতত্ব থেকে সমাজ-রাজনীতি-হাসান-হোসেন-রাধা-কৃষ্ণ বাদ যায় না কিছুই। গানের তালে তালে মাথা নাড়ে। চা বানাতে বানাতে চায়ের কাপে টুং টাং শব্দ করে তাল দেয় ভান্ডারী।
#
-এসব গানে কী মজা পান ভান্ডারী ভাই?
-কন কী? এ গুলা ভাল কইরা হুনেন। কত কিছু গানে গানে কয়!
-কী কয়?
-কয় দেহতত্ব, আল্লাপাকের ইশারা। মাইজভান্ডারীর গানে সেই সব ইশারা আছে। বোঝার চেষ্টা করি ভাইজান!
-বুঝলেন কিছু?
-হ। বুঝলামতো।
-কী?
-মানুষরে বাদ দিয়া তাঁরে পাওন যায় না!
#
টিভিতে তখন শাহ আবদুল করিমের ছেলে জালাল বেহালা বাজিয়ে গাইছে ‘‘নামাজ আমার হইলো না আদায়, ও আল্লা……’’।
#
আর ঠিক তখনই ম্যাক্সি পরা বৌ এসে পরে আচানক!!!