অতনু চট্টোপাধ্যায়’র পঞ্চপদী

লেখক পরিচিতি

নিখাদ মফস্বলি। কলকাতা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে খনি আর শিল্পের শহরে আসানসোলে জন্ম আর বেড়ে-ওঠা। ভীষণ পড়তে ভালোবাসেন। সেই ছোট থেকেই। আজ প্রায় বাহান্ন বছর (জন্ম-১৭/১০/১৯৬৮)। উৎসাহে ভাটা পড়ে নি। তারই সাথে খেয়াল-খুশিতে টুকটাক লেখালেখি। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলের শিক্ষক শ্রদ্ধেয় অমরেশ বিশ্বাস ধরিয়েছিলেন নেশাটা।
ভালোবাসেন ছোটদের সাথে সময় কাটাতে। ছোটদের জন্য লেখাও বিশেষ পছন্দের।


বনের মাঝে থাকতো বাঘা,নদীর ধারে গুপি
দুই স্যাঙ্গাতে হল দেখা,মাথায় রঙিন টুপি
ভূতের নাতির হবে বিয়ে
পেয়াদা এল খবর নিয়ে
"তোদের সেদিন গাইতে হবে", বললো চুপিচুপি

ছিপ ফেলে হারু রায়,চুল তার ঝাঁকড়া
একটাও মাছ নেই,এ কেমন ফ্যাকড়া
বঁড়শিতে গাঁথা চার
খেল কোন জানোয়ার?
ওরে বাবা,এ যে দেখি রাক্ষুসে কাঁকড়া

জগাই দাদা বসেছিল জংলা ঝোপের ধারে
স্বপ্ন দেখে জবর লড়াই, কে জেতে কে হারে?
পক্ষীরাজের বাচ্চা ঘোড়া
একখানা ঠ্যাঙ একটু খোঁড়া
টগবগিয়ে পৌঁছে গেল তেপান্তরের পারে

বাঁদর ছিল গাছের ডালে লম্বা লেজটি ঝুলিয়ে
সিংহ হাঁকে বনের ভিতর ঝাঁকড়া কেশর ফুলিয়ে
মগডালের ঐ ওপর থেকে
বাঁদর তখন বলল হেঁকে
"এই গরমে চুল ছাঁটো নি? বুদ্ধি যাবে গুলিয়ে"।

হবুচন্দ্র গান ধরেছে,গোবু বাজায় ঢোল
হবুর বৌ রাঁধছে বসে কানা বেগুনের ঝোল
নাচের তালে গানের সুরে
পা পিছলে সড়াৎ করে
উলটে পড়ে চেঁচায় গোবু " আমায় ধরে তোল"

ভালোবাসা ভোরের শিশির নরম রোদ আর সবুজ পাতা
ঝুটঝামেলার ঝড়বাদলে মাথার ওপর ধরলো ছাতা
এই তো ভাটি এই উজানে
গল্প শোনায় কানে কানে
স্বপ্ন দেখা রঙবেরঙে উঠল ভরে জীবনখাতা

ওপাড়ার দীনু ঘোষ, এপাড়ার নন্দ
ঘরে বসে ভাবে কষে, দরজাটা বন্ধ
" বাজ যেই ধমকায়,
পিলে কেন চমকায়?
পচে যাওয়া ভাতে কেন টক টক গন্ধ?"

গরমেতে রোদ্দুরে বেসুরো কে গায়?
"গান" যেন গুলি ছোঁড়ে প্রাণ বুঝি যায়
সে সুরের ইঙ্গিতে
বেপরোয়া ভঙ্গীতে
হামাগুড়ি দিয়ে চলে নরহরি রায়

ধর্ম ভাষা জাতির নামে আজকে যখন লড়াই লড়াই
যুদ্ধবাজের বর্গী হানা মানবতা হচ্ছে জবাই
পলাশ শিমুল রাঙায় ফাগুন
দাউ দাউ দাউ জ্বলুক আগুন
ভালোবাসার দিব্যি নিখাদ প্রতিরোধে সামিল সবাই।

১০

বাংলা মানে রবীন্দ্রনাথ, শামসুর রাহমান
বুকের মাঝে অমর একুশ, রমনার ময়দান
বাংলা আমার ভালোবাসা
জাপটে ধরে বাঁচার নেশা
বাউল ঝুমুর ভাটিয়ালি, আনন্দ কলতান।