প্রবাহমান নান্দনিকতায়

কীর্তনখোলার কথা

১৯৮২ সালে বরিশাল শহরের কয়েকটি কিশোর তদকালীন সামাজিক নানান অন্যায্যতা, অনৈতকতা, অপরাধ-অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করলো। সেই তাগিদে হাতে স্টেন্সিল কেটে সাইক্লোস্টাইল করে ‘বোমবাস্টিং’ (বোমব্লাস্টিং) নামে একটি পত্রিকার জন্ম। হাটে হাড়ি ভাঙায় সমাজ ভাঙে, কালো ভাঙে, মন্দ ভাঙে, অসত্য ভাঙে, অসত্য ও অন্যায্যতার দেয়াল ভেঙে খান খান হয়ে যায়।  টনক নড়ে সমাজ নেতাদের। ঢাল-তলোয়ারহীন কয়েকটি কিশোর সেদিন নেতাদের সাথে পেরে উঠেনি। থানা-পুলিশ এবং মাস্তানদের তাড়ানিতে সেবার কিশোরেরা দৌঁড়ে পালিয়ে বাঁচে – দৌঁড় শেষে মিশে যায় ‘কীর্তনখোলায়’।

১৯৮৩ সাল হতে ‘বোমবাস্টিং’ প্রতিবাদী মুখপত্র থেকে কীর্তনখোলা কবিতাপত্র  প্রেসে ছাপা হিসেবে প্রকাশিত হতে থাকে। কীর্তনখোলা কবিতাপত্র  ১৯৮৩  হতে  ১৯৮৮ পর্যন্ত ধারাবাহিত প্রকাশের পরে যুবকেরা জীবন জীবিকায় অন্যত্র চলে যায়। বরিশালে কোন যুবকের তখন কীর্তনখোলা কবিতা পত্রটি চালিয়ে নেয়া সম্ভব হলো না।

২২ বছর পর ২০০৯ সালে কীর্তনখোলায় সহসা উঠলো ঢেউ। ঢাকার যুবকেরা তখন রীতিমতো বয়োজ্যেষ্ঠ। অনেক আড্ডা, আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হলো; কীর্তনখোলা নিয়মিতভাবে ত্রৈমাসিক সাহিত্যপত্র হিসেবে প্রকাশ করা হবে।

    

২০০৯ সাল থেকে কীর্তনখোলা সাহিত্যপত্র নিয়মিত না হলেও অনিয়মিতভাবে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যবান কলেবরে প্রকাশিত হয়ে আসছিলো। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশের পর থেকে কীর্তনখোলা টিম প্রেস মিডিয়ার পাশাপাশি  কীর্তনখোলা সাহিত্যপত্র অনলাইন ভার্সনে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করলো।

বোমবাস্টিং থেকে কীর্তনখোলা সাহিত্যপত্র পর্যন্ত ধারাবাহিক সম্পাদকেরা ছিলেন; এডওয়ার্ড আশোক অধিকারী, যাকোব বাড়ৈ, গডফ্রে বিটু এবং বর্তমানে জনেশ লোটন রায়।

কেন কীর্তনখোলা অনলাইন সাহিত্যপত্র ?

আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে খুব সহজে কেবল দেশের (বাংলাদেশের) নয়, বিশ্বের সকল সাহিত্যমোদির কাছে সহজেই পৌঁছে যেতে চায়। একই সাথে বিশ্ব মানের লেখকদের সাথে যুক্ত হয়ে তাদের মননশীল লেখা প্রকাশ করে লেখক ও পাঠকদের সাথে মেলবন্ধন বা সম্পর্ক রচনা করবে।

প্রিন্টিং মিডিয়ার প্রতিযোগিতা এবং সিন্ডিকেটের জন্য অনেক প্রতিভাবান তরুন লেখক হয়তো সুযোগ করে নিতে পারেন না। কীর্তনখোলা অনলাইন সাহিত্যপত্র এমন অনেক প্রতিভাবান তরুন লেখকদের সরল জমিন হতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।